গানের জগতে কোটি ভক্ত থাকলেও, আপনার মধ্যে যদি বিনয়, ভদ্রতা না থাকে৷ আপনি একটা শুন্য – A BIG ZERO
একটা কঠিন বাস্তবতা হলো ৮০-৯০ দশকে বাংলাদেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি যেমন ছিল, এখন তেমন নেই৷ মানুষের গান শোনার মাধ্যম পরিবর্তন হয়ে ক্যাসেট প্লেয়ার, টেলিভিশন থেকে সরে, এমপিথ্রি প্লেয়ার আর সেখান থেকে এখন তা চলে এসেছে হাতের মুঠোয় মোবাইল ফোনের মধ্যেই। তখন যে কেউ চাইলেই গান রিলিজ করতে পারতো না৷ একটা গান এর এলবাম বের করতে একজন শিল্পীর কতটা স্ট্রাগল করতে হতো তা হয়তো সবারই কম বেশি জানা৷ সেই যায়গাটা থেকে যখন দেশে ক্লোজআপ ওয়ান এর মতো রিয়েলিটি শোআসলো৷ তখন সবাই ভাবলো যাক, ব্যাপারটা মন্দ না৷ খুব সহজেই কিছু ভালো শিল্পীকে আবিষ্কার করা যাবে৷

এরপর আরো অনেক অনেক একই রকম এর প্রোগ্রাম হলো৷ অনেক অনেক শিল্পীও এলো৷ এদের কজন টিকে আছে এখন? কেন নেই জানেন? যারা টিকে আছে তারা তাদের নিজের স্ট্রাগল এর কারনেই টিকে আছে৷৷ আর যারা নেই তারা ঝরে পরে গেছে নিজেদের দোষেই৷
এরপর এখন চলছে ফেসবুক আর ইউটিউবের যুগ৷ মানুষ গান শোনার চাইতে দেখছে বেশি৷ গানের ভাল মন্দ অনেকেই বিচার করছেন ভিউজ দিয়ে। নতুন অরিজিনাল গানের চাইতে কভার গানকেই মানুষ গ্রহন করছে বেশি। এটা নির্মম হলেও সত্য৷ কিন্তু সত্যি কথা হলো শিল্পের বিচারে একটা গান ভালো না মন্দ তার সাথে ভিউজের ন্যুনতম কোন সম্পর্ক নেই৷

আর কভার গান করা যেতেই পারে। অনেক বড় বড় শিল্পীরাও করেছেন কিন্তু নিজের অরিজিনাল গান থাকা খুব জরুরী৷ একটা শিল্পীর অরিজিনাল গান যদি ১ জনও শোনে সেটাই শিল্প জগতে নতুন কিছু যোগ করে৷ আর সবচাইতে বড় কথা এবং যে কারনে এত কিছু বলা তা হলো, ভালো মানুষ হওয়া। বিনয়ী হওয়া৷ একজন শিল্পী যদি বিনয়ী না হয়, ভালো মানুষ না হয়, তার মধ্যে যদি ন্যুনতম অহংকার ও থাকে৷ তবে তার ধ্বংস অনিবার্য।

একটু অরিজিত সিং এর কথাই বলি, সে ফেম গুরুকুল থেকে বাদ পরে যায়৷ কিন্তু দমে যায়নি। এরপর অনবরত বেশ কয়েক বছর শিখে নিজেকে তৈরী করেছে৷ এবং সেই স্ট্রাগল টা সে ভুলে যায়নি৷ অরিজিত ও তো রিয়েলিটি শো থেকে উঠে আসা৷ অথচ সেই একই অনুষ্ঠানে কাজী তৌকির, যিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তাকে আজ কজন চেনে?
সবশেষে একটা কথা, গানের জগতে আপনার যদি কোটি কোটি ভক্তও থাকে, কিন্তু আপনার মধ্যে যদি বিনয় না থাকে, ভদ্রতা না থাকে৷ আপনি একটা শুন্য। A big ZERO.
Comments are closed here.